প্রত্যাবাসন চুক্তি হলেও কার্যক্রম শুরু হয়নি
প্রকাশিত : ২২:২৩, ৫ জুলাই ২০১৮

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানে জানিয়েছে এখনও মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা বাংলাদেশিরা পালিয়ে আসছে।
চলতি বছরের জুন পর্যন্ত নতুন করে ১১ হাজার ৪৩২ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জায়েদ রাদ আল হোসেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তি সত্ত্বেও মিয়ানমার এখনও কোনও রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়নি বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত হামলা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর মাধ্যমে সেখানে হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় অন্তত দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হওয়া এসব রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সঙ্গে মিয়ানমার চুক্তি স্বাক্ষর করলেও এখনও শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন সুবিধা।
তবে এএফপির সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রোহিঙ্গারাও নিরাপত্তার অভাবে মিয়ানমারে ফিরতে রাজি হচ্ছেন না। মিয়ানমারও নিরাপত্তা নিশ্চিতের শক্তিশালী কোনও আশ্বাস দিতে পারছে না। তাদের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এলেও মাত্র ২০০ জনের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এরপরও মিয়ানমার বেশ কয়েকবার দাবি করেছে যে,অনেক রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তারা জানায়, মিয়ানমার থেকে নৌকায় করে পালানোর চেষ্টা করা রোহিঙ্গাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাদেরকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এক করতে নারাজ বাংলাদেশ। বাংলাদেশি শরণার্থী কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম গণমাধ্যমকে জানান, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি।
মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জায়েদ রাদ আল হোসেন বলেন, ‘প্রত্যাবাসন চুক্তি হওয়ার পরও বাংলাদেশ থেকে একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকার প্রত্যাবসন চুক্তি করে। কিন্তু এরপরও একজন রোহিঙ্গাও ফিরে আসেনি। আর যে কয়জন ফেরত এসেছে তাদের আটক করা হয়েছে।
সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে একটি উদাহরণ টেনে হাই কমিশনার বলেন, জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মাঝে ৫৮ জন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত গেছে এবং তাদের বিভিন্ন অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এরপর রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা করলেও বুথিয়াডংকারাগারে পাঠানো হয় তাদের। তবে একে বলা হয় ‘রিসিপশন সেন্টার’।
কেআই/এসি
আরও পড়ুন